ঢাকা রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট কে এই দিশানায়েকে?


আন্তর্জাতিক ডেস্ক  photo আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩-৯-২০২৪ দুপুর ১০:৩১

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফায় গড়ানো ভোট গণনায় বিজয়ী হয়েছেন দেশটির ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা ও মার্ক্সবাদী রাজনীতিক অনুরা কুমারা দিশানায়েকে। দেশটির ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহেকে হারিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।রোববার স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রোববার দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা শেষে মার্কসবাদী নেতা অনুরা কুমারা দিশানায়েককে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন। দেশটির ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহেকে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে হারিয়েছেন অনুরা।

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, শনিবারের নির্বাচনে ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন। ভোট গণনায় বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা দ্বিতীয় ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। দিশানায়েকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা ৩২ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং রণিল বিক্রমাসিংহে মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামী সোমবার শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে দিশানায়েকের। শ্রীলঙ্কার মসনদে বসা কে এই অনুরা কুমারা দিশানায়েকে?

• প্রচলিত রাজনীতির বাইরের এক নেতা অনুরা
দিশানায়েকে শিগগিরই শ্রীলঙ্কার সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন সংসদীয় নির্বাচনের ডাক দেবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে উদারবাদী ও মুক্ত-বাজার নীতি গ্রহণ করা একটি দেশে দিশানায়েকের জোটের নেওয়া বিভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটের জেরে মূল্যস্ফীতির ব্যাপক বৃদ্ধি আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নেমে যাওয়ার পর লঙ্কান জনগণের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। ওই বছর দেশটি খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ আমদানির জন্য অর্থ পরিশোধেও ব্যর্থ হয় এবং দেউলিয়া ঘোষণা করে।

চরম সংকটের সেই মুহূর্তে লাখ লাখ মানুষ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত সেই বিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। পরে দেশটির পার্লামেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে।

দুই বছরের বেশি সময়ে রণিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে দেশটির সরকার অর্থনৈতিক সংকট থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। তিনি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেন এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেলআউট প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করেন।

কিন্তু রাস্তায় নেমে আসা লাখ লাখ শ্রীলঙ্কানের কাছে রাজনৈতিক পরিবর্তন কেবল প্রতিষ্ঠিত দল ও রাজনৈতিক পরিবারের মাঝে ক্ষমতার হস্তান্তর ছাড়া কিছুই ছিল না। এনপিপি ও দিশানায়েক মানুষের এই ক্ষোভকে পুঁজি করে রাজনৈতিক প্রচারণা চালিয়েছেন। দেশটির অনেকেই তাকে পুরোনো ধাঁচের রাজনীতির বাইরের নতুন নায়ক হিসেবে দেখেন।

যদিও ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গার সময় জোট সরকারের অংশ হয়েছিল দিশানায়েকের জেভিপি। ওই সময় কিছুদিনের জন্য ক্ষমতাসীন জোটের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। দিশানায়েকের সমর্থকরা বলছেন, তিনি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত নন।

তবে নতুন এই প্রেসিডেন্ট কীভাবে শ্রীলঙ্কার বিশাল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবেন, এখন সেটিই বড় প্রশ্ন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় দিশানায়েকে কর এবং ইউটিলিটি বিল কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর ফলে সরকারের রাজস্ব আয় হ্রাস পাবে এবং তার নেওয়া নীতিমালা আইএমএফের ঋণের নির্ধারিত কিছু শর্তের সাথে সাংঘর্ষিক হবে।

এনপিপির জ্যেষ্ঠ নেতা ও সংসদ সদস্য হরিণী অমরাসুরিয়া বলেছেন, বর্তমান সরকার আইএমএফের সাথে যে বিস্তৃত চুক্তিতে পৌঁছেছে, আমরা তার মধ্যে থেকেই কাজ করবো। তবে আমরা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, বিশেষ করে কঠোর পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে।

• কে এই দিশানায়েকে
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে ১৭৭ কিলোমিটার দূরের অনুরাধাপুরা জেলার থামবুত্তেগামা গ্রামে জন্ম দিশানায়েকের। গ্রামীণ মধ্যবিত্ত এক পরিবারে জন্ম নেওয়া দিশানায়েকে কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক করেছেন। ছাত্রজীবন থেকে জেভিপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।

দেশটির সংসদে প্রথমবারের মতো আইনপ্রণেতা হিসেবে নির্বাচিত হন ২০০০ সালে। পরে ২০০৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেশটির কৃষি, প্রাণিসম্পদ, ভূমি ও সেচমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০১৪ সালে জেভিপির নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশটির সংসদে প্রধান বিরোধীদলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দিশানায়েকে।

জেভিপির বিরুদ্ধে দেশটিতে সহিংস রাজনীতিতে জড়ানোর ইতিহাস রয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টায় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেন তিনি। ১৯৭১ সাল এবং ১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে দলটি মার্ক্সবাদী রাজনীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে বিদ্রোহ শুরু করে। তবে সেই বিদ্রোহ ব্যাপক সহিংস হয়ে ওঠে। গণগ্রেপ্তার, নির্যাতন, অপহরণ ও গণহত্যায় দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত ৬০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বিদ্রোহে দলটির প্রতিষ্ঠাতা রোহানা উইজেবিরাসহ বেশির ভাগ জ্যেষ্ঠ নেতা মারা যান।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

Admin / Admin

কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পাকিস্তান-আফগানিস্তান

বাংলাদেশ-ইতালি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

কৃষি উপদেষ্টার লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সাথে মহাপরিচালক কু ডংইউ (Qu Dongyu) বৈঠক অনুষ্ঠিত

শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে OIC-এর উদ্যোগের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ: ষষ্ঠ ওআইসি শ্রম মন্ত্রীদের সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা

বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতে ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা

যু*দ্ধ বিরতি চুক্তি সই, শান্তির ইঙ্গিত গাজায়

সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্বালানি ও অবকাঠামো মন্ত্রীর সাথে নৌপরিবহন উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

আইএমও) মহাসচিব আর্সেনিও ডোমিনগেজ এর সাথে নৌপরিবহন উপদেষ্টার বৈঠক

নৌপরিবহন উপদেষ্টার দুবাইয়ে World Maritime Day Parallel Event-এ অংশগ্রহণ

জাতিসংঘ বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির স্বাধীন মূল্যায়নে সহায়তা করবে

মঙ্গলবার রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চ-স্তরের সম্মেলন

বাংলাদেশ ও তুরস্ক ইসলামে নারী বিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলনের নেতৃত্ব দেবে

দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে স্বল্প খরচে, জলবায়ু-সহনশীল আবাসনের আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস