বাংলাদেশের নতুন সংস্কার বাস্তবায়নে মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে --- প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এতে বলা হয়, বৈঠকে বাইডেন বলেছেন, বাংলাদেশের নতুন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
বৈঠকে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের আমলে সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ও বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে জানান ড. ইউনূস। এ সময় ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, দেশ পুনর্গঠনে তাঁর সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে। তখন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে কোনো সাহায্যে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি দেশের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, তাহলে তাদেরও (যুক্তরাষ্ট্র সরকার) পূর্ণ সহযোগিতা করা উচিত। বৈঠকে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জুলাই বিপ্লব চলাকালীন ও এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবিসংবলিত ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে উপহার দেন।
পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ড. ইউনূসের এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক বাংলাদেশের জন্য বিরল সুযোগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নেওয়ার বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। বৈঠক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠক বিরল ঘটনা। বৈঠকটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সস্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে। এটা আমাদের জন্য সুখবর।’ বৈঠকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, গণতান্ত্রিক পথে উত্তরণ এবং অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কার পদক্ষেপসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থান পায় উল্লেখ করে সেটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে জানান তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ যে মুহূর্তে গণতন্ত্র উত্তরণের পথে রয়েছে তখন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করছে এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গঠনে তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনের কূটনীতিক ও প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ভারতের প্রসঙ্গও ছিল। তবে ভারত নিয়ে আলোচনার কী ছিল তার সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ কর ও কোটামুক্ত সুবিধা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ১৮ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। ৫ শতাংশ না হলেও অন্তত ভিয়েতনামের (৭ শতাংশ) সমান দাবি করেছে বাংলাদেশ। বৈঠক সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টায় গ্রাউন্ড হায়াত হোটেলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতন ও পলায়নের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সরকার গঠনের পর প্রধান উপদেষ্টার এটাই প্রথম বিদেশ সফর।
স্থানীয় সময় ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। তাঁর বক্তব্যে বিগত দুই মাসে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থানের বিবরণ ও আগামী দিনে জনভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ়প্রত্যয় বিশ্বদরবারে তুলে ধরবেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, বিশ্বব্যাপী সংঘাত, রোহিঙ্গা সংকট, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতিকূলতা, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদ পাচার প্রতিরোধ, নিরাপদ অভিবাসন, অভিবাসীদের মৌলিক পরিষেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তর এবং ফিলিস্তিন সম্পর্কিত বিষয়গুলো তাঁর বক্তব্যে স্থান পাবে।
তা ছাড়া ড. ইউনূস ডাচ প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, নেপালের প্রধানমন্ত্রী, ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘ মানবাধিকার সম্পর্কিত হাইকমিশনার, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট এবং ইউএসএইডের প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এছাড়া কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গেও বৈঠক হতে পারে। এ ছাড়া চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেন, এ কথা বলার অবকাশ রাখে না যে, প্রধান উপদেষ্টার পরিচিতি এবং সুনাম বিশ্বব্যাপী। এ কারণে অনেক বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা তাঁর সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও সভায় অংশগ্রহণের জন্যও অনুরোধ এসেছে। যেহেতু তিনি মাত্র তিন দিন নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন, সেহেতু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এ স্বল্পসময়ের মধ্যে সবার অনুরোধ রক্ষা করা বেশ কঠিন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি অধ্যাপক শওকত আলী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি হারিয়েছি। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ৬০ শতাংশ তৈরি পোশাক ভারত থেকে আমদানি করে। ভিয়েতনাম যেখানে ৭ শতাংশ শুল্কে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে আমাদের সেখানে দিতে হয় ১৮ শতাংশ! এটা চরম বৈষম্য। আমরা আশা করব বাইডেন-ইউনূসের বৈঠকে জিএসপি ফেরত এবং তৈরি পোশাক রপ্তানি ফিরে পাওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে।’ প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ অধিবেশন ঘিরে বিশ্বনেতাদের নজর থাকবে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকটি সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।
Rp / Rp

আলজেরিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য 'ই-পাসপোর্ট' সেবা চালু

নেপালে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের বাইরে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে

বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলন, ঢাকা এর যৌথ বিবৃতি

চীনা প্রতিনিধিদলের বিসিসিসিআই এর কার্যালয় পরিদর্শন

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

মালয়েশিয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকোত্তর ভিসা প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে

প্রধান উপদেষ্টা আজিয়াটাকে বাংলাদেশে 5G পরিষেবা সম্প্রসারণের আহ্বান জানিয়েছেন

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার নেতারা অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে সম্মত

আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থায় পুনঃনির্বাচনের বাংলাদেশের প্রার্থিতা ঘোষণা

বাংলাদেশ ও মরক্কোর মধ্যে শিক্ষা ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টা এবং গর্ডন ব্রাউন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং রোহিঙ্গা শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করেছেন

বিবি গভর্নর যুক্তরাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগদান করেছেন
