ঢাকা শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রাজশাহীতে স্বতন্ত্র আ’লীগের চাপে ‘নৌকা’


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩-১-২০২৪ রাত ৯:৪১

রাজশাহীতে স্বতন্ত্র আ’লীগের চাপে পড়েছে নৌকা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমিয়ে তুলতে দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রাখায় রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। এতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরোধ ততই জোরালো হচ্ছে।
রাজশাহী জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫টিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য ভোটের মাঠে চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা বিভক্ত হয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গেই প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। এতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে কয়েকটি সংসদীয় এলাকায় দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই সংঘাতের ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা এবং অভিযোগও করা হয়েছে।

তৃণমূলের এই রেষারেষি দীর্ঘমেয়াদে দলের জন্যই ক্ষতিকর হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর অধিকাংশ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রাপ্তরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে ধরাশায়ী হতে পারেন। 
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে চতুর্থবারের মতো মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকার মাঝি হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তবে কাঁচি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে উভয়ের পক্ষেই প্রচার চালাচ্ছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী কাচিঁর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে।  ফলে এবার সদর আসনে নৌকার ‘ভরাডুবি’ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। 
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে চতুর্থবারের মতো এবারও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। তবে তাকে ‘জনবিচ্ছিন্ন’ আখ্যা দিয়ে দলের চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তাদের মধ্যে কাঁচি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনি মাঠে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. গোলাম রাব্বানী। নৌকাকে হারাতে তার সঙ্গে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী। এমনকি আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান (ঈগল প্রতীক) কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন। এতে জয়ের ব্যাপারে কাঁচির সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়েছে বলে মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা মনে করছেন। 
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে এবার দুবারের এমপি মো. আয়েন উদ্দিনকে বাদ দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদকে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে এই আসনে আওয়ামী লীগের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। তবে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু বিএনএম থেকে নোঙ্গর প্রতীকে এই আসনে নির্বাচন করছেন। তবে জয়ের ব্যাপারে নৌকার মাঝি আসাদ অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও বিএনপির সাবেক এই নেতা ভোটে আসায় শঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। কেননা, নৌকাকে হারাতে আওয়ামী লীগের একাংশ গোপনে তাকে সমর্থন দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তির সমর্থন পেতে পারেন তিনি। 
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে তিনবার নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হওয়া ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তৃণমূলে জনপ্রিয়তার কারণে এবার তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদকে নৌকা প্রতীক দিয়েছে হাইকমান্ড। নৌকা থেকে ছিটকে গিয়ে কাঁচি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এতে রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে এই আসনে। এখানে প্রতিনিয়ত স্বতন্ত্র ও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা, মারধর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। হুমকি-ধমকি, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, নির্বাচনি প্রচারে বাধা দেওয়া, মাইক ভাঙচুরসহ আরও অভিযোগ করা হচ্ছে। 
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে এবার নৌকার টিকিট পেয়েছেন সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা। তবে বর্তমান এমপি অধ্যাপক ডা. মনসুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ও যুবলীগ নেতা ওবায়দুর রহমানকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মাঠ গরম করার চেষ্টা ততই বেশি করছে। ফলে এই আসনেও প্রতিনিয়ত নির্বাচনি ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ, সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষসহ অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। 
রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে এবারও চতুর্থবারের মতো নৌকার টিকিট পেয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তবে তার আসনে কাঁচি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শক্তভাবে মাঠে নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক এমপি মো. রাহেনুল হক। বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাবলু ও বাঘা পৌরসভার মেয়র মো. আক্কাস আলীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নেওয়ায় বেকায়দায় রয়েছেন শাহরিয়ার আলম। কিন্তু সাধ্যমতো এমপি শাহরিয়ার পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার বাসনা নিয়ে বাঘা-চারঘাটে ডোর টু ডোর ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। তবে এই আসনে নৌকার বিজয় খুব বেশি সহজ হবে না বলে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে।

Admin / Admin

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঠালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের "উন্মুক্ত ওয়ার্ড সভা" অনুষ্ঠিত

মাদারীপুরের শিবচরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জমি দখলের চেষ্টা, গাছ কাটার অভিযোগ

বাগেরহাটে আসন পুনর্বহালের আন্দোলন, ৪ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় ও পালিত হয়েছে হরতাল

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে ছেলের হাতে মায়ের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড

লালমনিরহাটের আলোচিত রায়ফুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী রাজধানীতে আটক

বাগেরহাটের চারটি আসন বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত হরতাল শুরু

অবশেষে মহাদেবপুরে সাংবাদিক নির্যাতনকারী কনক মুহুরী জেল হাজতে

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে শান্তিপূর্ণ হরতাল

ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

সেপটিক ট্যাংকের ঝুঁকি ও করণীয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে ফায়ার সার্ভিস

বাগেরহাটের রামপালে নাগরিক ফোরাম গঠন

মাহাদেবপুরে ভ্রাম্যমান আদালত আত্রাই নদী থেকে নিষিদ্ধ ২৪টি রিং জাল ভষ্মীভূত করেছে