হামরা আলুত তবিল হারাচি, আবার আলুতি বেশি লাব করমো বারে
’’ হামরা আলুত তবিল হারাচি, আবার আলুতি বেশি লাব করমো বারে ’’ এলা উঁচা ভিটাত পতি বচরই আলু লাগায়, আগে আগে বেচে ওনেক লাব করি। কিন্তু এ বচর সেজুনের সোময় আলু না বেচে টোরত থুয়ে হামাকেরে ব্যাবাক লস হচে, হামরা একোন টোর আলাকে দুক্কে মোবাইলের নাম্বার বদলাচি’’ ’আলু তোলার জুন্নে খালি ফোন দেয়, হামরা টোরত থোয়া অলা আলু তোলমো না’। জমিতে আগাম আলু রোপন করতে করতে স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষায় এ কথাগুলো বলছিলেন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ভাবকি গ্রামের কৃষক আবু হোসেন। আলুতে বিপুল লোকসানের পরও আগাম আলু রোপন করতে করতে আবু হোসেন মুচকি হেসেই বললেন, ’এলা আলু যকোন বাজারত উটপে তকোন কোমপক্কে আলুর দাম থাকপে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। গত বচর হামি ৯০ টেকা কেজি পরযুন্ত বেচিচি’’। জানালেন, এ বছর তার ভিটে জমি থেকে লাল শাক রোপন ও উত্তোলনে দেরি হওয়ার কারনে আলু রোপনেও দেরি হয়েছে। এই আলু আরও আগে রোপন করতে পারলে পহেলা অগ্রহায়নের নবান্ন উৎসবে ২শত টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি করতে পারতেন। কারন নবান্ন উৎসবে নতুন আলু সবজি হিসেবে প্রয়োজন। এছাড়া জানালেন, তিনি গত বছর আলু হিমাগারে রেখে প্রচুর লাভবান হয়েছিলেন। আর তাই এ বছর অধিক লাভের আশায় মৌসুমে আলু বিক্রি না করে তার ৩ বিঘা জমিতে উৎপাদিত সব আলুই হিমাগারে সংরক্ষন করেছিলেন। কিন্তু বিধি বাম! এ বছর তিনি একেবারে মুলধনই হারিয়েছেন। শুধু তিনি না, তার মতো জেলার কয়েক হাজার কৃষক-ব্যবসায়ী হিমাগারে আলু সংরক্ষন করে মুলধন হারাচ্ছেন। বিশেষ করে জেলার কয়েক শতাধিক আলু ব্যবসায়ী মুলধন হারিয়ে এখন পথে বসার উপক্রম।
জানা গেছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারি জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাটে চলতি বছরে আলুতে কৃষক-ব্যবসায়ীরা তাদের মুলধন হারাচ্ছেন। বিশেষ করে গত বছরের মতো অধিক লাভের আশায় চলতি বছরে হিমাগারে আলু সংরক্ষনকারি কয়েক হাজার কৃষক-ব্যবসায়ীরা হয়েছেন সর্বশান্ত। এমনকি জেলার একাধিক হিমাগার ব্যবস্থাপকরা অধিক লাভের আশায় নামে-বেনামে আলু সংরক্ষন করে এখন হারাচ্ছেন মুলধন। আলু চাষি ও ব্যবসায়ীদের মুলধন বাঁচাতে কিছুদিন পুর্বে সরকার হিমাগার গেটে প্রতি কেজি আলুর মুল্য ২২ টাকা নির্ধারন করে দিলেও সেই মুল্যে জেলার কোনো হিমাগারে কেউ আলু ক্রয় করেননি। এমনকি জেলার অধিকাংশ হিমাগার গেটে আলু ক্রয় কিংবা হিমাগার থেকে উত্তোলনকারিদের দেখাই মিলছে না। ফলে এ বছর জেলার হিমাগার মালিকরাও রয়েছেন বিপুল পরিমান লোকসানের আশংকায়।
জেলার কালাই উপজেলার মাত্রাই গ্রামের আগাম আলু চাষী কালাম বললেন, তিনি তার ৪ বিঘা জমিতে উৎপাদিত প্রায় সব আলু বেশি লাভের আশায় কৌশুলে একাধিক হিমাগারে রেখে এখন সম্পুর্ন মুলধন হারিয়েছেন। তবে তিনি আশা ছাড়েননি। আলু সংরক্ষনের বিপুল পরিমান ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিনি ঋন করে তাঁর ২৫ শতক জমিতে আগাম আলু চাষ করছেন। আর এ আগাম আলু বেশি দামে বিক্রি করে গত মৌসুমের লোকসান কাটিয়েও কিছু বেশ লাভ করবেন বলে জানালেন। তার লাগানো আলু নবান্ন উৎসবে বাজারে তুলতে পারবেন জানিয়ে তিনি আরও বললেন, এই আগাম আলু প্রথম বাজারে উঠার সময় প্রতি কেজি আলু ১২০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়। তবে তিনি আরও জানান যে, যেসব কৃষকের ভিটেমাটি নাই, তারা আগাম আলু চাষ করতে পারেন না। এ কারনে তারা কোনো ভাবেই আলুতে হওয়া লোকসান কাটিয়ে উঠতে না পারার আশংকা রয়েছেন। কারন ধান কাটার পর সেই জমিতে রোপন করা আলু যখন বাজারে উঠবে তখন বাজারে আলুর ভরা মৌসুম থাকায় দাম কম থাকে। আর আগাম বাজারে উঠা আলু কেবলমাত্র তরি তরকারিতে ব্যবহারের ফলে সেই আলুর দাম অনেক বেশি থাকে।
জেলার আক্কেলপুর, জয়পুরহাট সদর, ও পাঁচবিবি উপজেলার বেশ কয়েকজন আগাম আলু চাষির সাথে আলাপকালে তারা জানালেন, গত প্রায় ২৫/৩০ বছর ধরে তারা তাদের উঁচু ভিটে মাটিতে আগাম আলু চাষ করছেন এবং প্রতি বছরই অধিক লাভবান হয়েছেন। আগাম আলু চাষে কোনদিনই তারা লোকসানের মুখে পরেননি বলেও জানালেন। আরা আরও বললেন, এ বছর হিমাগারে রাখা আলুতে তাদের বিপুল লোকসান হবার কারনে প্রতি বছরের মতো এ বছর সারা জেলায় অন্যান্য বছরের মতো ব্যাপক ভাবে আলু চাষ না হবার আশংকা রয়েছে। প্রতি বছর রোপা আমন ধান কাটার পরে সারা জেলায় ব্যাপক ভাবে আলু চাষ করা য়। এমনকি জেলার বিভিন্ন নীচু এলাকায় কিংবা যেসব বিল এলাকার জমিতে রোপা আমন ফসল কোন কোন বছর একাধিক বন্যার পানিতে নষ্ট হবার কারনে এসব এলাকার কৃষকরা যেসব নীচু জমিতে রোপা আমন চাষই করেন না, সেসব জমিতেও জেলার কৃষকরা দীর্ঘদিন থেকে আলু চাষ করে আসছিলেন। তবে এ বছর আলুতে ব্যাপক লোকসানের কারনে তারা সেসব জমিতে আলুর বিকল্প হিসেবে ভিন্ন ফসল উৎপাদনের কথা ভাবছেন।
বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন আলু চাষি কৃষক-ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, এ বছর তারা হিমাগারে তাদের রাখা আলু লোকসানের ভয়ে তুলছেনই না। অথচ হিমাগার কর্তৃপক্ষ বার বার ফোন করা সহ বিভিন্ন যোগাযোগ করছেন রাখা আলু উত্তোলনের জন্য। এ কারনে অনেকে আবার হিমাগারে আলু রাখার সময় তাদের দেওয়া মোবাইল নাম্বার পর্যন্ত পরিবর্ত্তন করেছেন, যাতে হিমাগার কর্তৃপক্ষ কোন যোগাযোগ করতে না পারে।
একাধিক হিমাগার ব্যবস্থাপকের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, বার বার যোগাযোগ করেও হিমাগারে রাখা বেশির ভাগ আলু মালিকদের সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। অনেকে আবার আসতে চেয়েও আসছেন না, কিংবা পরবর্ত্তীতে ওই মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে কৃষক-ব্যবসায়ীরা তাদের রক্ষিত আলু না উত্তোলন করলে চলতি বছর আমরা বিপুল পরিমান ক্ষতির মুখে পড়বো।
Rp / Rp
সন্যাসীরচর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল
ডামুড্যায় নুরুদ্দিন অপুকে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলো আ. লীগের অর্ধশত নেতাকর্মী
মনোনয়ন পরিবর্তনে শিবচরে বিএনপি একাংশের ক্ষোভ, মশাল মিছিল
ফ্যাসিবাদের রানী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ-মোড়েলগঞ্জে শিবির সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বাগেরহাটে বিএনপির কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল
বাগেরহাটে রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উদযাপন
ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মুনাজাত
স্থগিত হওয়া মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের বিএনপির মনোনয়ন পেলেন নাদিরা মিঠু
গণতন্ত্র ও ঐক্যের প্রতীক ধানের শীষ : নুরুদ্দিন অপু
নড়াইল -২ আসনে ধানের শীষ পেলেন মোঃ মনিরুল ইসলাম
মাদারীপুরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সেমিনার অনুষ্ঠিত
বাগেরহাটে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত ফার্নিচারের দোকান, ক্ষতি প্রায় ১০ লাখ টাকা